নীলমাধব থেকে জগন্নাথ মালব রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য। গগনচুম্বি তার প্রাসাদ। একবার সেখানে এক রহস্যময় সন্যাসি উপস্থিত হন। ভারতবর্ষের প্রতিটি তীর্থ তার নখদর্পণে। ইন্দ্রদুম্ন্য ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। কথা প্রসঙ্গে সন্যাসি তাকে জানান, শ্রীবিষ্ণু বর্তমানে নীলমাধব রূপে শবর রাজ্যে অত্যন্ত গোপনে শবরদের দ্বারা পূজিত হচ্ছেন। সন্যাসির কথা শুনে ইন্দ্রদুম্ন্য বিষ্ণু দর্শনের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। নীলমাধবের সন্ধানের জন্য তিনি রাজ পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতিকে শবর রাজ্যে পাঠালেন। শবর রাজ্যে এলেন বিদ্যাপতি। রাজ অতিথিকে শবর রাজ পরম আতিথ্যে বরন করলেন। রাজকন্যা ললিতাকে দিলেন অতিথি সেবার দায়িত্ব। কিছুদিনের মধ্যেই সরলমতি ললিতার মন জয় করে নিলেন চতুর বিদ্যাপতি। ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হয় তাদের সম্পর্ক। এক মুহুর্তের জন্য বিদ্যাপতি চোখের আড়াল হলে কেঁদে বুক ভাসান ললিতা। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন বিদ্যাপতি। তিনি এক প্রেমঘন মুহুর্তে ললিতার কাছে নীলমাধব দর্শনের আব্দার করলেন। উভয় সংকটে পড়লেন ললিতা। কারন, গভীর জঙ্গলে নীলমাধবের গুপ্ত মন্দির। তার সন্ধান শুধু শবররা জানেন এবং শবর ছাড়া অন্য সকলের জন্য সে স্থান নিসিদ্ধ। অনে...
Get link
Facebook
X
Pinterest
Email
Other Apps
হাতি খেয়েও এই অসুরের পেট ভরত না।
Get link
Facebook
X
Pinterest
Email
Other Apps
-
লবণ দৈত্যঃ
(কৃত্তিবাসী রামায়ণ, উত্তর কাণ্ড ৩৬৭ পৃষ্ঠা)
মথুরাধিপতি মধু দৈত্য দীর্ঘদিন ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে কঠোর তপস্যা করেন। তপস্যায় তুষ্ট হয়ে দেবাদিদেব মহাদেব তাকে মহা শক্তিশালী দিব্য ত্রিশূল উপহার দেন। এবং বলেন, আমার বরে তুমি লবণ নামে এক দুর্জয় পুত্র লাভ করবে। তোমার মৃত্যুর পর লবণ দৈত্য এই ত্রিশূলের বলে অপরাজেয় বীর হবে। হাতে শূল থাকলে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা পর্যন্ত তার সামনে যাওয়ার সাহস করবেন না। কিন্তু খালি হাতে যুদ্ধে গেলে সেদিন তার মৃত্যু হবে এবং এই শূল আবার আমার কাছে ফিরে আসবে। মধু দৈত্য রাবণের বোন কুম্ভীনসীকে হরণ করে নিয়ে আসেন। সেই ভিডিও আলোকপাতে ইতিমধ্যেই দেখান হয়েছে। এখানে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন। কুম্ভীনসী ও মধু দানবের পুত্র রূপে জন্মগ্রহণ করেন ভয়ঙ্কর লবণ দৈত্য। মধু স্বর্গবাসী হলে লবণ সেই দিব্য ত্রিশূল লাভ করেন। একবার ভগবান রামচন্দ্রের পূর্ব পুরুষ মান্ধাতা স্বর্গ দখলের জন্য অমরাবতী আক্রমণ করেন। তিনি ছিলেন সেই সময়ের অপরাজেয় রাজা এবং সসাগরা পৃথিবীর অধীশ্বর। মান্ধাতাকে পরাস্ত করা ইন্দ্রের পক্ষে অসম্ভব ছিল। তাই তিনি মান্ধাতার উদ্দেশ্যে বললেন, মহারাজ, আপনি আগে সমস্ত পৃথিবীকে জয় করুন, তারপর না হয় স্বর্গের চিন্তা করবেন। মান্ধাতা বললেন, মর্ত্যলোকের সব রাজা আমার বশ্যতা স্বীকার করেছে। ইন্দ্র বললেন, না, মধু দানবের পুত্র লবণ তোমাকে রাজা মানেন না। লজ্জিত মান্ধাতা ফিরে এসে মথুরায় দূত পাঠিয়ে লবণকে বশ্যতা স্বীকার করার বার্তা পাঠালেন। লবণের রাজসভায় গিয়ে দূত সদম্ভে মান্ধাতার বার্তা পাঠ করল। প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়ে সে বার্তাবাহককেই কেই চিবিয়ে খেয়ে ফেলল। সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও দূত ফিরে এল না। মান্ধাতা তার পরিণতি অনুমান করে সৈন্য সামন্ত নিয়ে মথুরা আক্রমণ করলেন। দুই পক্ষের ভয়ঙ্কর যুদ্ধ শুরু হল। যুদ্ধক্ষেত্রে লবণের শূলের আঘতে মান্ধাতার মৃত্যু হল। দীর্ঘ কাল অতিক্রান্ত হল। রঘুকুলে জন্মগ্রহণ করলেন রাম, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্ন। গুরুদেবের মুখে লবনাসুরের ঔধ্যত্য এবং পূর্বপুরুষ মান্ধাতার করুন পরিণতির কথা শুনে ক্ষিপ্ত রামচন্দ্র লবণকে উচিত শিক্ষা দিতে তক্ষুনি মধুপুর আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিলেন। তখন শত্রুঘ্ন হাতজোড় করে রামচন্দ্রকে বললেন, দাদা, আপনি এবং ভ্রাতা লক্ষ্মণ দুর্ধর্ষ রাবণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রাম করে ফিরেছেন। ভ্রাতা ভরতও আপনার অবর্তমানে ১৪ ধরে রাজকার্য পরিচালনা করে ক্লান্ত। সেই তুলনায় আমি এক প্রকার ক্রমহীন হয়ে বসে আছি। তাই লবণকে বদ করার দায়িত্ব আমাকে দিন। রামচন্দ্র খুশি হয়ে বললেন, তাই হোক। তুমি লবণকে বধ করে মধুপুরের সিংহাসনে বসে এবং সুখে প্রজা পালন করো। আমি তোমাকে মধুপুরের রাজা করলাম। দাদার অনুমতি নিয়ে বিশাল সৈন্যসামন্ত সহ তিনি লবণ বধে রওনা দিলেন। পথে বাল্মীকি ও ভার্গবের আশ্রমে দুই দিন আতিথ্য গ্রহণ করে তাদের কাছ থেকে লবণকে মারার উপায় জেনে নিলেন। এরপর লবণের রাজ্যে উপস্থিত হলেন শত্রুঘ্ন। লবণ দানবের ক্ষুধা ছিল পর্বত প্রমান। তার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকত হাতি, হরিণ, বন্য শুকর প্রভৃতি। এই জন্য তিনি নিজে প্রতিদিন শিকার করতে যেতেন। বনে যাবার আগে দিব্য ত্রিশূলকে সযত্নে মন্দিরে লুকিয়ে রেখে যেতেন। সেদিনও তিনি বিস্তর পশু শিকার করে ক্লান্ত হয়ে প্রাসাদে ফিরে দেখেন শত্রুঘ্ন সমগ্র প্রাসাদ ঘিরে ফেলেছেন। রেগে গিয়ে তিনি শত্রুঘ্নকে আক্রমণ করলেন। দুজনের ভয়ানক যুদ্ধ হল। এক পর্যায়ে শত্রুঘ্ন ধনুকে বিষ্ণুবান জুড়লেন। এই অস্ত্র দেখে লবণের বুক কেঁপে উঠল। মন্দির থেকে শূল আনার বাহানায় তিনি শত্রুঘ্নকে বললেন, আমি সারাদিন শিকার করে ক্লান্ত এবং অভুক্ত আছি। আমাকে একটু সময় দাও, আহার করে আবার যুদ্ধ হবে। শত্রুঘ্ন তার মনোভাব আন্দাজ করে বললেন, তা সম্ভব নয়। আমিও সারাদিন অভুক্ত আছি। যমের বাড়িতে গিয়েই আজকের আহার কোরো। উপায়ান্তর না দেখে লবণ শত্রুঘ্নের দিকে তেড়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি লবণকে উদ্যেশ্য করে বিষ্ণুবাণ নিক্ষেপ করলেন। বানে তার বক্ষ বিদীর্ণ হল। মহাদেবের আশীর্বাদধন্য শূল ছাড়া যুদ্ধ করায় লবণ মারা পরল। পূর্ব শর্ত অনুযায়ী ত্রিশূল স্বর্গে ফিরে গেল।
ভিডিও বানানোর জন্য আমি যে জিনিসগুলো ব্যাবহার করি। আপনাদেরও প্রয়োজন হলে নিচের লিঙ্ক থেকে নিতে পারেন।
সত্যিই কি হিন্দু ধর্মে ৩৩ কোটি দেবতা রয়েছে? প্রথমেই জানিয়ে রাখি সংস্কৃত ভাষায় 'কোটি' শব্দের দুটি অর্থ রয়েছে। একটি হল 'প্রকার' অপরটি 'সংখ্যা বিশেষ'। অথর্ব বেদের দশম অধ্যায়ে বলা হয়েছে, যস্য ত্রয়স্ত্রিংশদ্ দেবা অঙ্গে সর্বে সমাহিতাঃ। স্কম্মং তং ব্রুহি কতমঃ স্বিদেব সঃ।। অর্থাৎ পরমেশ্বরের প্রভাবে এই ৩৩ দেবতা সমগ্র বিশ্বে ব্যাপ্ত হয়ে আছেন। পরমেশ্বর বলতে পরমব্রহ্মকে বোঝানো হয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী এই পরমব্রহ্ম থেকেই সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড, দেব দেবী, স্থাবর জঙ্গম সমস্ত কিছুর সৃষ্টি হয়েছে। বৃহদারণ্যক উপনিষদেও ৩৩ দেবতার উল্লেখ পাওয়া যায়। এই ৩৩ প্রকার দেবতা হলেন, একাদশ রুদ্র, দ্বাদশ আদিত্য, অষ্টবসু এবং অশ্বিনী কুমারদ্বয়। (১১+১২+৮+২=৩৩) এর থেকে এটা পরিষ্কার যে হিন্দুদের ৩৩ প্রকার দেবতা রয়েছে, ৩৩ কোটি নয়। এবার দেখা যাক এদের সম্পূর্ণ পরিচয়। একাদশ রুদ্র: রুদ্র হলেন সংহারের দেবতা। রুদ্রগনের অধিপতি স্বয়ং মহাদেব। কোনো কোনো গ্রন্থে একাদশ রুদ্রকে ভগবান শিবের ১১টা রূপ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ঋগ্বেদে একাধিক বার রুদ্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। এরা হলেন, মন্যু, ম...
অষ্টবসুর অভিশাপ সুমেরু পর্বতের পাশেই মনোরম পরিবেশে মহর্ষি কশ্যপের তপোবন। সেখানে মৃগশিশু নির্ভয়ে খেলে বেড়ায়, রকমারি ফুলের সৌরভে ও পাখিদের কল কাকলিতে এক স্বর্গীয় পরিবেশ বিরাজ করে। তবে মহর্ষি কশ্যপের তপোবনে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল দিব্য গাভী নন্দিনী। নন্দিনী হল স্বর্গীয় কামধেনু সুরভীর কন্যা। এর দুগ্ধের এমনই গুন যে একবার যদি মর্ত্যবাসী তা পান করতে পারে তবে তাদের আয়ুস্কাল দশ হাজার বছর পর্যন্ত হতে পারে। একদিন অষ্টবসু অর্থাৎ ধরা বা পৃথিবী, ধ্রুব, সোম, অনল, অনিল, প্রভাস, প্রত্যুষ ও অহ কশ্যপের তপোবনে স্ত্রীদের নিয়ে উপস্থিত হলেন। ইতস্তত মনের আনন্দে ঘুরতে ঘুরতে তারা একসময় কশ্যপের গোয়ালে নন্দিনীকে দেখতে পেলেন। গাভীর সৌন্দর্যে মোহাবিষ্ট হয়ে তারা অপলক নয়নে তার দিকে তাকিয়ে রইলেন। অষ্টবসুর অন্যতম প্রভাসের পত্নী নন্দিনীকে দেখে এতটাই আকৃষ্ট হন যে, তিনি বায়না ধরেন, যেভাবেই হোক এই গাভী তার চাই। প্রভাস বললেন, দেবী, মর্ত্যবাসীরা এর জন্য এমন হা হুতাস করতে, আমাদের এর কী প্রয়োজন? তখন তার স্ত্রী বললেন, নরলোকে উশীনরের কন্যা জিতবতী আমার প্রিয় সখী। আমি তার জন্যই এই গাভী চাই। বারংবার আবদারের পর প্রভ...
নীলমাধব থেকে জগন্নাথ মালব রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য। গগনচুম্বি তার প্রাসাদ। একবার সেখানে এক রহস্যময় সন্যাসি উপস্থিত হন। ভারতবর্ষের প্রতিটি তীর্থ তার নখদর্পণে। ইন্দ্রদুম্ন্য ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। কথা প্রসঙ্গে সন্যাসি তাকে জানান, শ্রীবিষ্ণু বর্তমানে নীলমাধব রূপে শবর রাজ্যে অত্যন্ত গোপনে শবরদের দ্বারা পূজিত হচ্ছেন। সন্যাসির কথা শুনে ইন্দ্রদুম্ন্য বিষ্ণু দর্শনের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। নীলমাধবের সন্ধানের জন্য তিনি রাজ পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতিকে শবর রাজ্যে পাঠালেন। শবর রাজ্যে এলেন বিদ্যাপতি। রাজ অতিথিকে শবর রাজ পরম আতিথ্যে বরন করলেন। রাজকন্যা ললিতাকে দিলেন অতিথি সেবার দায়িত্ব। কিছুদিনের মধ্যেই সরলমতি ললিতার মন জয় করে নিলেন চতুর বিদ্যাপতি। ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হয় তাদের সম্পর্ক। এক মুহুর্তের জন্য বিদ্যাপতি চোখের আড়াল হলে কেঁদে বুক ভাসান ললিতা। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন বিদ্যাপতি। তিনি এক প্রেমঘন মুহুর্তে ললিতার কাছে নীলমাধব দর্শনের আব্দার করলেন। উভয় সংকটে পড়লেন ললিতা। কারন, গভীর জঙ্গলে নীলমাধবের গুপ্ত মন্দির। তার সন্ধান শুধু শবররা জানেন এবং শবর ছাড়া অন্য সকলের জন্য সে স্থান নিসিদ্ধ। অনে...
Comments
Post a Comment