সুমেরু পর্বতের পাশেই মনোরম পরিবেশে মহর্ষি কশ্যপের তপোবন। সেখানে মৃগশিশু নির্ভয়ে খেলে বেড়ায়, রকমারি ফুলের সৌরভে ও পাখিদের কল কাকলিতে এক স্বর্গীয় পরিবেশ বিরাজ করে। তবে মহর্ষি কশ্যপের তপোবনে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল দিব্য গাভী নন্দিনী। নন্দিনী হল স্বর্গীয় কামধেনু সুরভীর কন্যা। এর দুগ্ধের এমনই গুন যে একবার যদি মর্ত্যবাসী তা পান করতে পারে তবে তাদের আয়ুস্কাল দশ হাজার বছর পর্যন্ত হতে পারে। একদিন অষ্টবসু অর্থাৎ ধরা বা পৃথিবী, ধ্রুব, সোম, অনল, অনিল, প্রভাস, প্রত্যুষ ও অহ কশ্যপের তপোবনে স্ত্রীদের নিয়ে উপস্থিত হলেন। ইতস্তত মনের আনন্দে ঘুরতে ঘুরতে তারা একসময় কশ্যপের গোয়ালে নন্দিনীকে দেখতে পেলেন। গাভীর সৌন্দর্যে মোহাবিষ্ট হয়ে তারা অপলক নয়নে তার দিকে তাকিয়ে রইলেন। অষ্টবসুর অন্যতম প্রভাসের পত্নী নন্দিনীকে দেখে এতটাই আকৃষ্ট হন যে, তিনি বায়না ধরেন, যেভাবেই হোক এই গাভী তার চাই। প্রভাস বললেন, দেবী, মর্ত্যবাসীরা এর জন্য এমন হা হুতাস করতে, আমাদের এর কী প্রয়োজন? তখন তার স্ত্রী বললেন, নরলোকে উশীনরের কন্যা জিতবতী আমার প্রিয় সখী। আমি তার জন্যই এই গাভী চাই। বারংবার আবদারের পর প্রভাস এক প্রকার বাধ্য হয়ে অন্যান্য বসুদের সহায়তায় দিব্য গাভী নন্দিনীকে হরণ করে নিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর মহর্ষি কশ্যপ আশ্রমে এসে দেখলেন গোয়াল শুন্য। গাভীর সন্ধানে তিনি সমস্ত তপোবন তন্ন তন্ন করে খুঁজলেন। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া গেল না। সন্ধ্যায় ধ্যানযোগে তিনি অষ্টবসুর এই অপকর্মের কথা জানতে পারলেন। অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হয়ে কশ্যপ অষ্টবসুকে অভিশাপ দিলেন, যারা আমার গাভী হরন করেছে তারা পৃথিবীতে মনুষ্যজন্ম গ্রহণ করুক। অভিশপ্ত হয়ে বসুগন মহর্ষির কাছে ছুটে এসে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে অনুনয় করতে লাগলেন। মহর্ষি কশ্যপ কিছুটা শান্ত হয়ে বললেন, আমার অভিশাপ ব্যার্থ হবে না। তবে মর্ত্যে জন্মগ্রহণের পরই তোমরা গোলোকে ফিরে আসতে পারবে। কিন্তু প্রভাসের অপরাধ সবচেয়ে বেশি, তাই তাকে পূর্ণ মানবজীবন কাল পৃথিবীতে কাটাতে হবে। যাও তোমরা প্রস্তুত হও। বিষন্ন চিত্তে তারা ধীরে ধীরে সেখান থেকে প্রস্থান করলেন। আসার পথে দেবী গঙ্গার সাথে তাদের দেখা হল। বসুদের ভারাক্রান্ত মুখ দেখে গঙ্গা তাদের কুশল জিজ্ঞাসা করলেন। বসুগন একে একে সব ঘটনা বর্ণনা করলেন এবং জাহ্নবীকে অনুনয় করে বললেন, দেবী পৃথিবীতে আমরা আপনার গর্ভে জন্মগ্রহণ করতে চাই। জন্ম মাত্রই আপনি আমাদেরকে আপনার পবিত্র জলে নিক্ষেপ করবেন। তাহলেই আমরা মুক্তি লাভ করে গোলোকে ফিরে আসতে পারব। আর প্রভাসকে যেহেতু পৃথিবীতেই তার সম্পূর্ণ জীবন কাটাতে হবে তাই তাকে আমরা আমাদের পূণ্যের অংশ দেব যাতে সে মহাবীর হতে পারে। গঙ্গা বললেন তাই হবে। নরলোকে মহারাজ শান্তনুর ঔরসে আমার গর্ভে তোমাদের জন্ম হবে। তারপর যথাসময়ে অষ্টবসু পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করলেন। সেই কাহিনী আলোকপাতের আগের ভিডিওতেই দেখানো হয়েছে। ডেসক্রিপশনে লিংক দেওয়া আছে দেখে নিতে পারেন। অষ্টম পুত্র রূপে প্রভাস জন্মগ্রহণ করেন। নাম রাখা হয় দেবব্রত। পূর্বের প্রতিশ্রুতি মতো নির্দিষ্ট সময়ে গঙ্গা দেবব্রতকে তার পিতা শান্তনুর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে এক 'ভীষণ' প্রতিজ্ঞা করায় দেবব্রতর নাম হয় 'ভীষ্ম'। কী সেই প্রতিজ্ঞা আর কেনইবা তাকে 'পিতামহ ভীষ্ম' বলা হয় এই কাহিনী আলোকপাতে খুব শীঘ্রই আসছে। ভিডিওর আপডেট পেতে চ্যানেলটা সাবস্ক্রাইব করে পাশের ঘন্টা বাজিয়ে রাখুন। আর এই ভিডিওটা কেমন লাগলো কমেন্ট করুন। ভালো থাকবেন।
গঙ্গা পুত্র ভীষ্মের জন্ম কিভাবে হয়?
https://www.youtube.com/watch?v=7cDbK6MpXYY
Tags:
Vishma, shantanu, Ganga, Ganges, story of Bhisma, গঙ্গা পুত্র, ভীষ্ম, শান্তনু, গঙ্গা পুত্র ভীষ্ম, অষ্টবসু, গঙ্গা সাগর, গঙ্গা সাগরে সন্তান বিসর্জন, ভীষ্মের জন্ম, জাহ্নবী, শান্তনু ও গঙ্গা,
Curse of Bhisma, curse, curse of Astabasu, Astabasu, kamdhenu, suravi, surabhi, nandini, কামধেনু, ভীষ্মের অভিশাপ, সুরভী, নন্দিনী, কশ্যপ, কাশ্যপ,
Visma, ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা, ভীষ্ম, দেবব্রত, পিতামহ ভীষ্ম, গঙ্গা, গঙ্গা
পুত্র ভীষ্ম, শান্তনু, গঙ্গা সাগরে সন্তান বিসর্জন
অষ্টবসু, অষ্টবিদ্যা, হস্তিনাপুর, যৌবরাজ্য, মৎস্যগন্ধা, সত্যবতী, অম্বা, অম্বিকা, অম্বালিকা, কাশীরাজ, শাল্যরাজ, ধীবর রাজ, শান্তনু ও সত্যবতী, ভীষ্মের ইচ্ছা মৃত্যু, চিত্রাঙ্গদ, বিচিত্রবীর্য, ব্যাসদেব, ধৃতরাষ্ট্র, পান্ডু, পান্ডব, কৌরব, দুঃশলা
Comments
Post a Comment