নীলমাধব থেকে জগন্নাথ মালব রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য। গগনচুম্বি তার প্রাসাদ। একবার সেখানে এক রহস্যময় সন্যাসি উপস্থিত হন। ভারতবর্ষের প্রতিটি তীর্থ তার নখদর্পণে। ইন্দ্রদুম্ন্য ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। কথা প্রসঙ্গে সন্যাসি তাকে জানান, শ্রীবিষ্ণু বর্তমানে নীলমাধব রূপে শবর রাজ্যে অত্যন্ত গোপনে শবরদের দ্বারা পূজিত হচ্ছেন। সন্যাসির কথা শুনে ইন্দ্রদুম্ন্য বিষ্ণু দর্শনের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। নীলমাধবের সন্ধানের জন্য তিনি রাজ পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতিকে শবর রাজ্যে পাঠালেন। শবর রাজ্যে এলেন বিদ্যাপতি। রাজ অতিথিকে শবর রাজ পরম আতিথ্যে বরন করলেন। রাজকন্যা ললিতাকে দিলেন অতিথি সেবার দায়িত্ব। কিছুদিনের মধ্যেই সরলমতি ললিতার মন জয় করে নিলেন চতুর বিদ্যাপতি। ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হয় তাদের সম্পর্ক। এক মুহুর্তের জন্য বিদ্যাপতি চোখের আড়াল হলে কেঁদে বুক ভাসান ললিতা। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন বিদ্যাপতি। তিনি এক প্রেমঘন মুহুর্তে ললিতার কাছে নীলমাধব দর্শনের আব্দার করলেন। উভয় সংকটে পড়লেন ললিতা। কারন, গভীর জঙ্গলে নীলমাধবের গুপ্ত মন্দির। তার সন্ধান শুধু শবররা জানেন এবং শবর ছাড়া অন্য সকলের জন্য সে স্থান নিসিদ্ধ। অনে...
Get link
Facebook
X
Pinterest
Email
Other Apps
হিড়িম্বা রাক্ষসী ও ভীমের মধ্যে কি হয়েছিল? Story of Hidimba ������
Get link
Facebook
X
Pinterest
Email
Other Apps
-
হিড়িম্বা
কুন্তী সহ পান্ডবদের পুড়িয়ে মারার জন্য দুর্যোধন জতুগৃহ নির্মাণ করেন। কিন্তু বিদুরের সাহায্যে পান্ডবরা রাতের অন্ধকারে জঙ্গলের পথ দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। সারা রাত হেঁটে তারা এক গহন অরণ্যে প্রবেশ করেন। পথ কষ্টে সকলেই ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর ছিলেন। ভীম সকলকে এক জায়গায় বসিয়ে পানীয় জল খুঁজতে যান। অনেক সন্ধানের পর তিনি একটি জলাশয় দেখতে পান। নিজে প্রাণ ভরে জলপান করলেন। কিন্তু মা এবং ভাইদের জন্য জল নেবার পাত্র না পেয়ে শেষে নিজের কাপড়ের আঁচল ভিজিয়ে নিয়ে চললেন। ভাইদের কাছে এসে দেখলেন, ক্ষুধা তৃষ্ণায় অবসন্ন হয়ে তারা সবাই গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়েছে। ভীমের মনে হল এখনই এদের ঘুম ভাঙানো ঠিক হবে না, একটু বিশ্রাম নিক। তিনি কাপড়ের আঁচলে জল নিয়ে তাদের ঘুম ভাঙার অপেক্ষায় বসে রইলেন। এই জঙ্গলেই হিড়িম্ব নামে এক নরখাদক রাক্ষস ও তার বোন হিড়িম্বা বাস করত। তাদের ভয়ে কাক পক্ষিও এই জঙ্গলে ঢোকার দুঃসাহস দেখাত না। দীর্ঘদিন পর বনের মধ্যে মানুষের গন্ধ পেয়ে হিড়িম্ব বোনকে বললেন, যাও ওই মানুষগুলোকে বধ করে নিয়ে এসো অনেক দিন পর দুই ভাইবোনে মিলে পেট ভরে নরমাংস খাবো। দাদার আদেশে হিড়িম্বা মানুষের গন্ধ অনুসরণ করে কুন্তী সহ পঞ্চপাণ্ডবের কাছে উপস্থিত হলেন। কিন্তু দূর থেকে ভীমের বিশাল শরীর ও মনোহর রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলেন। তিনি এক স্বল্প বসনা সুন্দরী নারীর রূপ ধারণ করে তার কাছে এসে বললেন, আমি হিড়িম্ব রাক্ষসের বোন হিড়িম্বা। তার আদেশে আমি তোমাদের হত্যা করে খাদ্য হিসেবে নিয়ে যেতে এসেছিলাম। কিন্তু আমি তোমাকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি, আমাকে বিবাহ করো। তারপর চলো দুজনে এখান থেকে পালিয়ে যাই। ভীম বললেন সেটা কোনমতেই সম্ভব নয়, আমি আমার মা ও ভাইদের ত্যাগ করতে পারবো না। ইতিমধ্যে বোনের ফিরে আসতে দেরি হওয়ায় হিড়িম্ব সেখানে এসে দেখেন হিড়িম্বা সুন্দরী রমণীর রূপ ধারণ করে ভীমের সঙ্গে কথা বলছে। বোনের মনোভাব আন্দাজ করে তিনি প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হলেন। তার সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ল হিড়িম্বার উপর। দিগ্বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে বোনকে বললেন, তুই অসতী, বিশ্বাস ঘাতিনী। এই মানুষ গুলোর সাথে তোকেও হত্যা করব। এই বলে সে পান্ডবদের দিকে এগিয়ে গেল। ভীম তাকে বাধা দিলে দুজনের ঘোরতর মল্লযুদ্ধ শুরু হয়। চিৎকার চেঁচামেচিতে কুন্তী সহ অন্যান্য পান্ডবদের ঘুম ভেঙে যায়। ভীম হিড়িম্ব রাক্ষসকে মাথার উপরে তুলে শুন্যে ঘুরিয়ে আছাড় মেরে হত্যা করেন। কুন্তী হিড়িম্বাকে ডেকে তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেন। হিড়িম্বা কুন্তীর পা ধরে বললেন মা, আমি আপনার পুত্রকে বিবাহ করতে চাই। ভীম বললেন, এ মায়াবী রাক্ষসী একে বিশ্বাস করা যায় না। হিড়িম্বা বললেন, আমি প্রতিজ্ঞা করছি রাক্ষসী হলেও কোনদিন কারো কোনো অনিষ্ট করব না। যুধিষ্ঠির বললেন, ঠিক আছে তাই হবে। কিন্তু তোমাকে একটা নিয়ম পালন করতে হবে। ভীম সারাদিন তোমার সঙ্গে বিচরণ করবে এবং সূর্যাস্তের পর আমাদের কাছে ফিরে আসবে। হিড়িম্বা সম্মত হলেন। ভীম বললেন, তোমার পুত্রের জন্ম হওয়া পর্যন্ত আমি তোমার সাথে থাকব। হিড়িম্বা বিনা বাক্য ব্যায়ে সব শর্ত মেনে নিয়ে বললেন, তাই হোক। আমকে যখনই স্মরণ করবেন আমি উপস্থিত হবো। তারপর হিড়িম্বা ভীমকে নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। পরবর্তীতে ভীমের ঔরসে হিড়িম্বার গর্ভে মহা বলবান ও মহা জ্ঞানী ঘটোৎকচের জন্ম হয়। এবং পূর্ব শর্ত অনুযায়ী ভীম তাদের ত্যাগ করে চলে আসেন।
(কাশীদাসী মহাভারতের আদি পর্ব ১৩২ পৃষ্ঠা, রাজশেখর বসু অনুদিত মহাভারতের আদি পর্ব ৬৬ পৃষ্ঠা)
tags:
Hirimba, hidimba, who was hirimba, bhima, bhim, pandava, panch pandava, why did bhima married hirimba, kunti, Duryodhan, jatugriha, yudhisthir, how pandavas survived from jatugriha,
হিড়িম্বা, হিড়িম্ব, ভীম, ভিম, ঘটোৎকচ, কুন্তী, যুধিষ্ঠির, ভীম ও হিড়িম্বা, জতুগৃহ, বিদুর, দুর্যোধন, ভীমের স্ত্রী, ঘটোৎকচের জন্ম, ঘটোৎকচের মা কে, ঘটোৎকচের বাবা কে,hidimba rakshasi,hidimba devi temple,hidimba vadh,hidimba parvat,hidimba, bhima, hidimba and bhima, হিড়িম্বা, #হিড়িম্বা রাক্ষসী, ভীম, হিড়িম্বা ও ভীম, ঘটোৎকচ, ভীম ও হিড়িম্বা,
সত্যিই কি হিন্দু ধর্মে ৩৩ কোটি দেবতা রয়েছে? প্রথমেই জানিয়ে রাখি সংস্কৃত ভাষায় 'কোটি' শব্দের দুটি অর্থ রয়েছে। একটি হল 'প্রকার' অপরটি 'সংখ্যা বিশেষ'। অথর্ব বেদের দশম অধ্যায়ে বলা হয়েছে, যস্য ত্রয়স্ত্রিংশদ্ দেবা অঙ্গে সর্বে সমাহিতাঃ। স্কম্মং তং ব্রুহি কতমঃ স্বিদেব সঃ।। অর্থাৎ পরমেশ্বরের প্রভাবে এই ৩৩ দেবতা সমগ্র বিশ্বে ব্যাপ্ত হয়ে আছেন। পরমেশ্বর বলতে পরমব্রহ্মকে বোঝানো হয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী এই পরমব্রহ্ম থেকেই সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড, দেব দেবী, স্থাবর জঙ্গম সমস্ত কিছুর সৃষ্টি হয়েছে। বৃহদারণ্যক উপনিষদেও ৩৩ দেবতার উল্লেখ পাওয়া যায়। এই ৩৩ প্রকার দেবতা হলেন, একাদশ রুদ্র, দ্বাদশ আদিত্য, অষ্টবসু এবং অশ্বিনী কুমারদ্বয়। (১১+১২+৮+২=৩৩) এর থেকে এটা পরিষ্কার যে হিন্দুদের ৩৩ প্রকার দেবতা রয়েছে, ৩৩ কোটি নয়। এবার দেখা যাক এদের সম্পূর্ণ পরিচয়। একাদশ রুদ্র: রুদ্র হলেন সংহারের দেবতা। রুদ্রগনের অধিপতি স্বয়ং মহাদেব। কোনো কোনো গ্রন্থে একাদশ রুদ্রকে ভগবান শিবের ১১টা রূপ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ঋগ্বেদে একাধিক বার রুদ্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। এরা হলেন, মন্যু, ম...
অষ্টবসুর অভিশাপ সুমেরু পর্বতের পাশেই মনোরম পরিবেশে মহর্ষি কশ্যপের তপোবন। সেখানে মৃগশিশু নির্ভয়ে খেলে বেড়ায়, রকমারি ফুলের সৌরভে ও পাখিদের কল কাকলিতে এক স্বর্গীয় পরিবেশ বিরাজ করে। তবে মহর্ষি কশ্যপের তপোবনে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল দিব্য গাভী নন্দিনী। নন্দিনী হল স্বর্গীয় কামধেনু সুরভীর কন্যা। এর দুগ্ধের এমনই গুন যে একবার যদি মর্ত্যবাসী তা পান করতে পারে তবে তাদের আয়ুস্কাল দশ হাজার বছর পর্যন্ত হতে পারে। একদিন অষ্টবসু অর্থাৎ ধরা বা পৃথিবী, ধ্রুব, সোম, অনল, অনিল, প্রভাস, প্রত্যুষ ও অহ কশ্যপের তপোবনে স্ত্রীদের নিয়ে উপস্থিত হলেন। ইতস্তত মনের আনন্দে ঘুরতে ঘুরতে তারা একসময় কশ্যপের গোয়ালে নন্দিনীকে দেখতে পেলেন। গাভীর সৌন্দর্যে মোহাবিষ্ট হয়ে তারা অপলক নয়নে তার দিকে তাকিয়ে রইলেন। অষ্টবসুর অন্যতম প্রভাসের পত্নী নন্দিনীকে দেখে এতটাই আকৃষ্ট হন যে, তিনি বায়না ধরেন, যেভাবেই হোক এই গাভী তার চাই। প্রভাস বললেন, দেবী, মর্ত্যবাসীরা এর জন্য এমন হা হুতাস করতে, আমাদের এর কী প্রয়োজন? তখন তার স্ত্রী বললেন, নরলোকে উশীনরের কন্যা জিতবতী আমার প্রিয় সখী। আমি তার জন্যই এই গাভী চাই। বারংবার আবদারের পর প্রভ...
নীলমাধব থেকে জগন্নাথ মালব রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য। গগনচুম্বি তার প্রাসাদ। একবার সেখানে এক রহস্যময় সন্যাসি উপস্থিত হন। ভারতবর্ষের প্রতিটি তীর্থ তার নখদর্পণে। ইন্দ্রদুম্ন্য ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। কথা প্রসঙ্গে সন্যাসি তাকে জানান, শ্রীবিষ্ণু বর্তমানে নীলমাধব রূপে শবর রাজ্যে অত্যন্ত গোপনে শবরদের দ্বারা পূজিত হচ্ছেন। সন্যাসির কথা শুনে ইন্দ্রদুম্ন্য বিষ্ণু দর্শনের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। নীলমাধবের সন্ধানের জন্য তিনি রাজ পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতিকে শবর রাজ্যে পাঠালেন। শবর রাজ্যে এলেন বিদ্যাপতি। রাজ অতিথিকে শবর রাজ পরম আতিথ্যে বরন করলেন। রাজকন্যা ললিতাকে দিলেন অতিথি সেবার দায়িত্ব। কিছুদিনের মধ্যেই সরলমতি ললিতার মন জয় করে নিলেন চতুর বিদ্যাপতি। ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হয় তাদের সম্পর্ক। এক মুহুর্তের জন্য বিদ্যাপতি চোখের আড়াল হলে কেঁদে বুক ভাসান ললিতা। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন বিদ্যাপতি। তিনি এক প্রেমঘন মুহুর্তে ললিতার কাছে নীলমাধব দর্শনের আব্দার করলেন। উভয় সংকটে পড়লেন ললিতা। কারন, গভীর জঙ্গলে নীলমাধবের গুপ্ত মন্দির। তার সন্ধান শুধু শবররা জানেন এবং শবর ছাড়া অন্য সকলের জন্য সে স্থান নিসিদ্ধ। অনে...
Comments
Post a Comment