পুরীর জগন্নাথ দেবের অদ্ভুত চেহারা কেন? The Story of Lord Jagannath

Image
নীলমাধব থেকে জগন্নাথ মালব রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য। গগনচুম্বি তার প্রাসাদ। একবার সেখানে এক রহস্যময় সন্যাসি উপস্থিত হন। ভারতবর্ষের প্রতিটি তীর্থ তার নখদর্পণে। ইন্দ্রদুম্ন্য ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। কথা প্রসঙ্গে সন্যাসি তাকে জানান, শ্রীবিষ্ণু বর্তমানে নীলমাধব রূপে শবর রাজ্যে অত্যন্ত গোপনে শবরদের দ্বারা পূজিত হচ্ছেন। সন্যাসির কথা শুনে ইন্দ্রদুম্ন্য বিষ্ণু দর্শনের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। নীলমাধবের সন্ধানের জন্য তিনি রাজ পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতিকে শবর রাজ্যে পাঠালেন। শবর রাজ্যে এলেন বিদ্যাপতি। রাজ অতিথিকে শবর রাজ পরম আতিথ্যে বরন করলেন। রাজকন্যা ললিতাকে দিলেন অতিথি সেবার দায়িত্ব। কিছুদিনের মধ্যেই সরলমতি ললিতার মন জয় করে নিলেন চতুর বিদ্যাপতি। ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হয় তাদের সম্পর্ক। এক মুহুর্তের জন্য বিদ্যাপতি চোখের আড়াল হলে কেঁদে বুক ভাসান ললিতা। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন বিদ্যাপতি। তিনি এক প্রেমঘন মুহুর্তে ললিতার কাছে নীলমাধব দর্শনের আব্দার করলেন। উভয় সংকটে পড়লেন ললিতা। কারন, গভীর জঙ্গলে নীলমাধবের গুপ্ত মন্দির। তার সন্ধান শুধু শবররা জানেন এবং শবর ছাড়া অন্য সকলের জন্য সে স্থান নিসিদ্ধ। অনে...

অষ্টাবক্র মুনি, ইনি জন্মের আগেই মাতৃগর্ভে বসে শাস্ত্রজ্ঞ হয়েছিলেন



অষ্টাবক্র:

তপোবনের মনোরম পরিবেশে উদ্দালক মুনির আশ্রম। শিষ্য কহোড়ের সঙ্গে তিনি নিজ কন্যা সুজাতার বিয়ে দিয়েছিলেন। কহোড় ছিলেন শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত। এক সময় সুজাতা গর্ভবতী হলেন। গর্ভস্থ সন্তান গর্ভে থাকা কালীনই শুনে শুনে সমস্ত শাস্ত্র অধ্যয়ন করে ফেলল। এক দিন কহোড় সুজাতাকে শাস্ত্র পাঠ করে শোনাচ্ছেন এমন সময় গর্ভস্থ শিশু বলে উঠল, পিতা আপনার পাঠ সঠিক হচ্ছে না। ক্রুদ্ধ কহোড় রেগে গিয়ে গর্ভস্থ শিশুকে বললেন, গুরুজনের সাথে এরকম অভব্য আচরণের জন্য তোর শরীরের অষ্ট স্থানে বক্র হোক। গর্ভের দশম মাসে আর্থিক অনটনের কারনে কহোড় জনক রাজার সভায় সাহায্যের জন্য উপস্থিত হলেন। সেখানে শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত বন্দীর সঙ্গে শাস্ত্র বিচারে তিনি পরাজিত হলেন। বিচারের শর্ত অনুযায়ী বন্দী কহোড়কে নদীর জলে ডুবিয়ে দিলেন। এর কিছুদিন পর সুজাতা এক পুত্র সন্তান প্রসব করলেন। গর্ভে থাকা কালীন পিতার অভিশাপের কারণে সদ্যজাতের শরীরের আট জায়গায় বক্র হল। এই জন্যই তার নাম হয়েছিল অষ্টাবক্র। বারো বছর বয়সে তিনি তার পিতার করুন পরিনতির কথা জানতে পারেন। মামা শ্বেতকেতুকে নিয়ে অষ্টাবক্র মিথিলায় উপস্থিত হলেন। প্রসঙ্গক্রমে জানিয়ে রাখি, উদ্দালক মুনির পুত্র এই শ্বেতকেতুই হিন্দু ধর্মে বিবাহ প্রথার সূচনা করেছিলেন। সেই কাহিনী দেখার জন্য ভিডিওর শেষে এখানে ক্লিক করুন। ফিরে আসি আগের ঘটনায়, রাজা জনকের কাছে গিয়ে অষ্টাবক্র বললেন, কোথায় সেই পন্ডিত বন্দী? আমি তাকে বিচারে পরাস্ত করতে চাই। জনকরাজ  বালক তাকে বিচারের শর্তের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বললেন, তুমি বালক। আর বন্দী মহাজ্ঞানী এক শাস্ত্র বিষারদ। তার কাছে পরাজিত হয়ে বহু শাস্ত্রবিদ জলে ডুবে মরেছে। কিন্তু অষ্টাবক্রের যুক্তিবাদী কথাবার্তার কাছে জনকের যুক্তি টিকলো না। রাজ সভায় উপস্থিত হলেন বন্দী। তার সাথে শুরু হল বালক অষ্টাবক্রের শাস্ত্র বিচার। একপর্যায়ে বালকের প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে অধবদন হলেন বন্দী। সকলে বালকের পান্ডিত্যে মুগ্ধ হয়ে ধন্য ধন্য করতে লাগলেন। তখন অষ্টাবক্র বললেন, আপনি আমার পিতাকে জলে ডুবিয়েছিলেন। এখন বিচারের শর্ত অনুযায়ী আপনাকেও জলে ডোবানো উচিত। তখন বন্দী বললেন, শুনুন সভাসদ গন, আমি বরুন দেবের পুত্র। আমার পিতা পাতালে এক মহাযজ্ঞ করছেন, পিতার নির্দেশেই আমি শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিতদের সেই যজ্ঞ দেখতে পঠিয়েছি। এখন সেই যজ্ঞ সম্পূর্ণ হয়েছে। তারা সবাই কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবেন। বলতে বলতে নদী থেকে  একে একে ব্রাহ্মনগন বেরিয়ে আসতে লাগলেন। সেখানেই প্রথম বারের জন্য পিতা কহোড়ের সঙ্গে অষ্টাবক্রের দেখা হল। বন্দী বললেন, আমি অষ্টাবক্রের পান্ডিত্যে মুগ্ধ হয়েছি। তাই তার সম্মান রাখতে বিচারের শর্ত অনুযায়ী আমিও জলে নিমজ্জিত হব। পুত্রের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে কহোড় বললেন, পুত্র এই পবিত্র নদীতে অবগাহন করো, তোমার শরীরের সমস্ত বিকৃতি দূর হবে। নদীতে স্নান করে অষ্টাবক্রের শরীর স্বাভাবিক হল। অষ্টাবক্রের বক্র অঙ্গ সম অঙ্গে পরিনত হয়েছিল বলে তখন থেকে এই নদীর নাম হল সমঙ্গা।

তথ্য সূত্র:

রাজশেখর বসু অনুদিত মহাভারতের বন পর্ব (১৯৮ পৃষ্ঠা)।

Related facts:

অষ্টাবক্র, কহোড়, উদ্দালক, শ্বেতকেতু, মিথিলা, জনকরাজ, জনক, বন্দী, বরুন, বরুনদেব, সমুদ্র, সমুদ্রের দেবতা, মাতৃ গর্ভ, মাতৃগর্ভে বসে কে পন্ডিত হয়েছিলেন, অষ্টাবক্রের কাহিনী, অষ্টাবক্র কে, অষ্টাবক্রের বাবা কে, কহোড়ের অভিশাপ, অষ্টাবক্রের অভিশাপ, অভিশাপ, astabakra, asthabakra, asthavakra, who was asthabakra, kahor, kahode, curse of astabakra, curse of kahor, king janak, mithila, Indian mythology,


Comments

Popular posts from this blog

অষ্টবসুর অভিশাপ, ভীষ্মের পূর্ব জন্ম, কামধেনু, curse of Astabasu, curse o...

পঞ্চসতী বা পঞ্চকন্যা কারা

গন্ধর্ব কারা who are gandharba, alokpat