Posts

Showing posts from February, 2018

পুরীর জগন্নাথ দেবের অদ্ভুত চেহারা কেন? The Story of Lord Jagannath

Image
নীলমাধব থেকে জগন্নাথ মালব রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য। গগনচুম্বি তার প্রাসাদ। একবার সেখানে এক রহস্যময় সন্যাসি উপস্থিত হন। ভারতবর্ষের প্রতিটি তীর্থ তার নখদর্পণে। ইন্দ্রদুম্ন্য ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। কথা প্রসঙ্গে সন্যাসি তাকে জানান, শ্রীবিষ্ণু বর্তমানে নীলমাধব রূপে শবর রাজ্যে অত্যন্ত গোপনে শবরদের দ্বারা পূজিত হচ্ছেন। সন্যাসির কথা শুনে ইন্দ্রদুম্ন্য বিষ্ণু দর্শনের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। নীলমাধবের সন্ধানের জন্য তিনি রাজ পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতিকে শবর রাজ্যে পাঠালেন। শবর রাজ্যে এলেন বিদ্যাপতি। রাজ অতিথিকে শবর রাজ পরম আতিথ্যে বরন করলেন। রাজকন্যা ললিতাকে দিলেন অতিথি সেবার দায়িত্ব। কিছুদিনের মধ্যেই সরলমতি ললিতার মন জয় করে নিলেন চতুর বিদ্যাপতি। ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হয় তাদের সম্পর্ক। এক মুহুর্তের জন্য বিদ্যাপতি চোখের আড়াল হলে কেঁদে বুক ভাসান ললিতা। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন বিদ্যাপতি। তিনি এক প্রেমঘন মুহুর্তে ললিতার কাছে নীলমাধব দর্শনের আব্দার করলেন। উভয় সংকটে পড়লেন ললিতা। কারন, গভীর জঙ্গলে নীলমাধবের গুপ্ত মন্দির। তার সন্ধান শুধু শবররা জানেন এবং শবর ছাড়া অন্য সকলের জন্য সে স্থান নিসিদ্ধ। অনে...

দোল উৎসব কিভাবে শুরু হল

Image
দোল উৎসব কিভাবে শুরু হল? নন্দরাজ ও মা যশোদার নয়নের মণি বালক শ্রীকৃষ্ণ। তার দুষ্টুমিতে সমগ্র গোকুলবাসী দিশেহারা। গোয়ালিনীরা ভয়ে ভয়ে থাকেন, এই বুঝি দুষ্টু কানাই তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে তাদের ননীর হাড়িতে হামলা করল। এসব সত্বেও বালক শ্রীকৃষ্ণ সকলের আদরের ধন। তার দুষ্টুমি সকলে হাসি মুখে সহ্য করেন।  এত আনন্দের মাঝেও মা যশোদার মনে একটু কষ্ট ছিল। তার কানাইয়ের গায়ের রং অন্যদের থেকে একটু চাঁপা। অভিমানী কৃষ্ণও একদিন মায়ের কাছে অনুযোগ করেন, মা, রাধা সহ অন্যান্য সখীরা এত ফর্সা আর আমার রং কালো কেন?   একথা শুনে মা যশোদা কিছুটা আবির এনে কৃষ্ণের গায়ে মাখিয়ে দিয়ে বললেন, যাও এই আবির সবাইকে মাখিয়ে দাও। তাহলে আর কেউ ফর্সা কেউ কালো থাকবে না, সবাই সমান হয়ে যাবে। উৎফুল্ল শ্রীকৃষ্ণ ছুটলেন সকলকে আবিরে রাঙিয়ে দিতে। সেই থেকে শুরু দোল যাত্রা। দিনটি ছিল ফাল্গুনী দোল পূর্ণিমা।   অপর দিকে এই ফাল্গুনী দোল পূর্ণিমার দিনেই নদীয়ার নবদ্বীপে শচীমাতার কোল আলো করে আবির্ভূত হয়েছিলেন শ্রী চৈতন্য দেব। তাই বৈষ্ণব সমাজেও দিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। YouTube Channel link:👇 https://www.youtube.com/c/alokpat Like o...

হোলি উৎসব কেন পালন করা হয়, Festival of Colours

Image
হোলি উৎসব কেন পালন করা হয়? Festival of Colours. স্কন্দ পুরাণ থেকে জানা যায় হোলিকা রাক্ষসী ছিলেন রাক্ষস রাজ হিরণ্যকশিপুর বোন এবং মহর্ষি কাষ্যপ ও দিতির কন্যা। ব্রহ্মার বরে হিরণ্যকশিপু ছিলেন মানব, দানব ও দেবতাদের অবধ্য। বর পেয়ে হিরণ্যকশিপু ধীরে ধীরে অহংকারী ও স্বেচ্ছাচারী হতে শুরু করেন। এক সময় তিনি চরম দেবতা বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন। এই হিরণ্যকশিপুর পুত্র রূপেই জন্ম গ্রহণ করেন ভক্ত প্রহ্লাদ। প্রহ্লাদ ছিলেন পরম বিষ্ণু ভক্ত। হিরণ্যকশিপু পুত্রের বিষ্ণু ভক্তি দূর করার সব রকম চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন। কিন্তু শ্রীবিষ্ণুর অসীম কৃপাধন্য প্রহ্লাদকে কোনো ভাবেই হত্যা করা গেল না। অবশেষে তিনি বোন হোলিকার স্মরনাপন্ন হলেন। দেবতাদের কাছ থেকে হোলিকা এই বর পেয়েছিলেন যে , আগুন তাকে দগ্ধ করতে পারবে না। কিন্তু তিনি যেন এর অপব্যবহার না করেন। দাদার আদেশে হোলিকা রাক্ষসী, ভাইপো প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে প্রবেশ করল। দেবতার বরের অপব্যবহার করায় হোলিকা পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আর হরিনাম করতে করতে অক্ষত অবস্থায় আগুন থেকে বেরিয়ে এল বালক প্রহ্লাদ। দিনটি ছিল ফাল্গুনী দোল পূর্ণিমার আগের দিন। সে...

২১শে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস

Image
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস 1947 সালের 15 ই আগস্ট, বৃহত্তর ভারত ভেঙে জন্ম হল পাকিস্তানের। বর্তমান বাংলাদেশও ছিল পাকিস্তানের অংশ। সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালিত হত পশ্চিম পাকিস্তান থেকে। প্রথম থেকেই শাসকদের লক্ষ্য ছিল, সমগ্র পাকিস্তানের সরকারি ভাষা, স্কুল কলেজের প্রধান ভাষা হোক উর্দু। এই লক্ষ্যে পাকিস্তানের সরকারি ভাষার তালিকা থেকে বাংলাকে ছেঁটে ফেলা হয়। আত্ম সম্মানে ঘা লাগে বাঙালির। গর্জে ওঠে তৎকালীন ছাত্র ও যুব সমাজ। জারি হয় ১৪৪ ধারা। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে নেমে আসে। সঙ্গে সঙ্গে নিরীহ জনতার উপর গুলি চালায় বর্বর পাকিস্তানি প্রশাসন। গুলির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন আব্দুল জব্বার, আবুল বরকত, আবদুস সালাম, রফিকউদ্দিন আহমেদ সহ আরো অনেকে। শহীদদের রক্তে লাল হয় ঢকার রাজপথ। নিজের মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষায় এরকম আত্ম বলিদান পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বাঙালি জাতির এই আবেগময় আন্দোলনকে সীকৃতি জানিয়ে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা ...

শিবরাত্রি ব্রত কেন পালন করা হয়? The Story of Shivaratri

Image
শিবরাত্রি ব্রত কেন পালন করা হয়? The Story of Shivaratri. আজ থেকে অনেক দিন আগের কথা, বারাণসীতে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করত।  জাল, ফাঁদ, দড়ির ফাঁস, তির ধনুক এবং প্রাণী হত্যার নানা রকম হাতিয়ার নিয়ে সে‌ সব সময় জঙ্গলে ঘুরত। একদিন সেই ব্যাধ বনের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে একটি গাছের নিচে ঘুমিয়ে পড়ল। সূর্য অস্ত গেল। চারিদিকে আঁধার নেমে এল। বন্য জন্তুর চিৎকারে ঘুম ভাঙল ব্যাধের। ঘোর অন্ধকারে কোন কিছুই ভালো দেখা যায় না। পাশেই ছিল একটি বড় বেলগাছ। অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে সে সেই বেলগাছে চড়ে বসল। সারাদিন ব্যাধ ছিল অভুক্ত। শীতে ও ক্ষুধায় তার শরীর কাপঁতে লাগল। দৈববশত সেই দিনটি ছিল শিবচতুর্দশী। আর বেলগাছের নিচেই ছিল একটি শিব লিঙ্গ। উপবাসী ব্যাধের শরীরের কম্পনে একটি একটি করে শিশিরে ভেজা বেলপাতা শিব লিঙ্গের উপর পড়তে লাগল। এভাবে উপবাসী ব্যাধ নিজের অজান্তেই শিবরাত্রিব্রত করে ফেলল। শিবের করুনায় তার সব পাপ ধুয়ে গেল। পরদিন ভোরের আলো ফুটলে ব্যাধ নিজের বাড়িতে ফিরে এল। কালক্রমে ব্যাধের পরমায়ু শেষ হল। যমদূতেরা এল  তার আত্মাকে যমালয়ে নিয়ে যেতে। একই সময়ে শিবদূতেরা এসে তাকে তাকে যমদূত দের কাছ থেকে ছিনিয়...

ভীষ্ম ও শিখন্ডীর কাহিনী, The Story of Shikhandi and Bhishma

Image
ভীষ্ম ও শিখন্ডীর কাহিনী, The Story of Shikhandi and Bhishma. শিখণ্ডীর কাহিনী জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে তার পূর্বজন্মে। পূর্বজন্মে শিখণ্ডী ছিলেন কাশীরাজের বড় মেয়ে অম্বা। উপযুক্ত সময়ে কাশীরাজ অম্বার জন্য স্বয়ম্বর সভার আয়োজন করলেন। দেশ বিদেশ থেকে রাজা মহারাজেরা এলেন অম্বার পাণিপ্রার্থী হয়ে। মহাবীর ভীষ্ম ছিলেন আজন্ম ব্রহ্মচারী। তিনি তার বৈমাত্রেয় ভাই হস্তিনাপুরের রাজা বিচিত্রবীর্যের  সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য স্বয়ম্বর সভায় উপস্থিত হলেন। মহাবীর ভীষ্মের শৌর্য বীর্য ত্রিভূবন খ্যাত। তাই সহজেই সেখান থেকে তিনি অম্বা ও তার অপর দুই বোন অম্বিকা ও অম্বালিকাকে ভাইয়ের জন্য হরণ করে আনলেন। বিচিত্রবীর্জের কাছে পৌঁছে অম্বা জানালেন যে তিনি শাল্বরাজকে ভালোবাসেন এবং বিয়ে করতে হলে তাকেই করবেন। একথা জানার পর অম্বাকে শাল্বরাজের কাছে পৌঁছে দেওয়া হল। কিন্তু শাল্বরাজ জানালেন যেহেতু অম্বাকে অপর পুরুষ হরণ করে নিয়ে গেছে তাই তিনি তাকে গ্রহণ করতে পারবেন না। নিরুপায় অম্বা ভীষ্মের কাছে গিয়ে জানালেন, আপনার কারণেই আজ আমার এই পরিস্থিতি। তাই আপনিই আমাকে পত্নীর মর্যাদা দিন। ভীষ্ম জানালেন তিনি আজন্ম ব্রহ্মচারী, ন...

একশো ভাইয়ের এক বোনের কাহিনী

Image
একশো ভাইয়ের এক বোন,  দুঃশলা জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্র ও গান্ধারীর একশ জন পুত্র ছিল। এছাড়াও ছিল এক কন্যা। নাম তার দুঃশলা। মহাভারতে এর সম্পর্কে খুব বিস্তারিত বিবরণ নেই।  সিন্ধুরাজ জয়দ্রথের সাথে দুঃশলার বিবাহ হয়েছিল। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে জয়দ্রথ কৌরবদের হয়ে পাণ্ডবদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন। সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে অর্জুন জয়দ্রথকে হত্যা করেন। অসহায় দুঃশলা তখন নিজের পুত্র সুরথকে সিংহাসনে বসান। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পাণ্ডবরা ভগবান কৃষ্ণের সহায়তায় জয়লাভ করেন।এরপর তারা  অশ্বমেধ যজ্ঞ করেন। যজ্ঞের ঘোড়া নিয়ে অর্জুন সিন্ধুদেশে উপস্থিত হন। পিতার হত্যাকারী অর্জুনের আগমনে ভীত হয়ে সুরথ জ্ঞান হারান  মৃত্যুমুখে পতিত হন। খবর পেয়ে অর্জুন সেখানে উপস্থিত হন। দুঃশলা সম্পর্কে পাণ্ডবদেরও বোন ছিলেন। তার কারনেই বোন দুঃশলা বিধবা হয়েছেন এবং ভাগ্নে সুরথের মৃত্যুর জন্যও তিনি নিজে দায়ী একথা স্মরণ করে অর্জুন অত্যন্ত মর্মাহত হন। তখন অর্জুন সুরথের নাবালক পুত্রকে সিন্ধুদেশের পরবর্তী রাজা ঘোষণা করেন। বোন দুঃশলাকে বার বার সান্ত্বনা দিয়ে অর্জুন প্রস্থান করেন। YouTube Channel link:👇 https://www.youtube.com/c/alokpat...

Popular posts from this blog

অষ্টবসুর অভিশাপ, ভীষ্মের পূর্ব জন্ম, কামধেনু, curse of Astabasu, curse o...

পঞ্চসতী বা পঞ্চকন্যা কারা

গন্ধর্ব কারা who are gandharba, alokpat